রাজশাহীতে রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত |
রাজশাহী প্রতিনিধি:
খেজুরের রস খুবই মজাদার খাবার। প্রতি বছর স্থানীয় কৃষকরা খেজুরের রস ও গুড় প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করে। ইতোমধ্যে স্থানীয় গাছিরা তাদের উৎপাদন ক্ষমাত র্র্সর্ম্পূন গাছ গুলো প্রস্তুত করেছে। সঠিক তদারকিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
রাজশাহীসহ ৯ উপজেলায় কৃষি অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনে সকল ফসলের চাষাবাদ হলেও খেজুর গাছের চাষাবাদের জন্য নেয় কোন ব্যবস্থা। জেলার চারঘাট, বাঘা, দূর্গাপুর, পুঠিয়া, তানোর গোদাগাড়ী, বাগমাড়া, পবা ও মোহনপুর উপজেলায় খেজুর গাছের বিচরণ দেখা যায়। এবছর জেলায় ৫৪৩ হেক্টরে ১১লক্ষ ২২ হাজার ৩৪৩টি গাছ চাষ করা হয়েছে। প্রতি গাছ থেকে গড়ে ২০ কেজি রস থেকে ৮ কেজি গুড় উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৮৮৯০.৭৪ মেট্রিক টন। উৎপাদিত গুড়ের বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ১৪৬ কোটি ৬৯ লক্ষ ৭২ হাজার ১০০টাকা।
অসহায়ত্যের কারনে প্রতিনিয়িত স্থানীয় কৃষকরা খেজুর রস ও গুড় তৈরীতে অনিহা প্রকাশ করছে। অধিক খরচের কারনে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। যার কারনে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাচ্ছে এবং ভবিষৎত প্রজন্ম বঞ্চিত হবে এই ঐতিহ্য খাবারের তালিকা থেকে। উপজেরা কৃষি দপ্তর থেকে সরকারী কোন বরাদ্দ তাদের দেয়া হচ্ছে না। তবে কৃষি দপ্তরের ফিল্ড কর্মকর্তরা ভালো মানের খেজুরের গুড় উৎপাদনে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
উপজেলার কৃষক জাকির হোসেন বলেন, পাখি ডাকা ভোরে তাদের ঘুম থেকে উঠে শীশীর ভেজা মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করতে হয়। সেই রস বাড়ির আঙ্গিনায় গুড় প্রস্ততের জন্য ব্যবস্তা করতে হয়। ওই সময় পরিবারের সদস্যদের সহযোগীতায় গুড় প্রস্তত করা হয়। রস ও গুড় খুবই মজাদার খাবার। প্রতি বছর স্থানীয়সহ অনেক জেলার অতিথিরা রস খাবরের জন্য আসেন। শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য তারা খেজুরের গুড় ক্রয় করে নিয়ে যায়। শীতের সময় খেজুরের গুড় ছাড়া কোন পিঠা ও পায়েস তৈরী করা সম্ভব হয় না। অতি কষ্টের অর্জিত খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরী করে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না কৃষকরা। অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীদের কারনে তাদের খাটি গুড় বিক্রয়ের অযোগ্য বলে ক্রেতারা আখ্যায়িত করে। এই বিষয়ে অসাধু গুড় প্রস্তুত ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোড় দাবি জানান স্থানীয় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা কৃষিবিদ লুৎফুন নাহার গনমাধ্যমকে বলেন, শীতের মৌসুমে খেজুরের রস ও গুড়ের তৈরী পিঠা ও পায়েসের সাদ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। কিন্ত ওই সকল খেজুর চাষীদের জন্য সরকারী দপ্তর কতৃক কোন বরাদ্দ নেই। কৃষি দপ্তর থেকে কৃষকদের না না ভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রশাসনকে নিতে হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, কোন ধরনের অনিয়মের খবর পেলে প্রশাসন ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন। কখন কখনও অভিযুক্তদের আটক করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে ডিডি মোজদার হোসেন রাজশাহী কৃষি দপ্তর জানান, খেজুরের রস ও গুড় অত্যান্ত জনপ্রিয় খাবার। শীতের মৌসুমে খেজুরের গুড় ছাড়া কোন পিঠা পায়েস তৈরী করা যাই না। প্রতি বছরের ন্যায় এবারোও কৃষি দপ্তর খেজুর চাষীদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন মাঠ পর্যায়ে কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা। সরকারী কর্তৃক এখাতে কোন বরাদ্দ না থাকলেও এই দপ্তর থেকে সার্বিক অন্যান্য সহযোগিতা করা হয়।
No comments:
Post a Comment