কালের সাক্ষী : ফরিদপুরের বাইশরশি জমিদার বাড়ি - BANGLA KHOBOR | বাংলা খবর

Breaking News


Sunday, December 17, 2023

কালের সাক্ষী : ফরিদপুরের বাইশরশি জমিদার বাড়ি

 

কালের সাক্ষী : ফরিদপুরের বাইশরশি জমিদার বাড়ি
কালের সাক্ষী : ফরিদপুরের বাইশরশি জমিদার বাড়ি

২০০ বছর পুরানো সদরপুরের বাইশরশি জমিদার বাড়ি। জেনে নিন অজানা তথ্যগুলো।


নাজমুল হাসান নিরব:

বৃহত্তর ফরিদপুরের বিখ্যাত স্থানগুলোর মধ্যে বাইশরশি জমিদার বাড়িটি অন্যতম। ফরিদপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে বর্তমান আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফের কাছাকাছি সদরপুর উপজেলায় অবস্থিত এই বাড়িটি। বাড়িটিকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্রের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও নেই সরকারি কোন উদ্যোগ।


প্রতিনিয়ত বাড়িটি থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান প্রতœতত্ত্ব সম্পদ। এককালে প্রতাপশালী বাইশরশি জমিদাররা ফরিদপুর-বরিশালসহ ২২টি পরগনার বা জোত মহলের অধিপতি ছিলেন। জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি তখনকার দিনে বাইশরশির বাড়িটি প্রায় ৫০ একর জমি নিয়ে বাগানবাড়ি, পুকুর, পূজামণ্ডপ ও দ্বিতল বিশিষ্ট ছোট-বড় ১৪টি দালান কোঠা দিয়ে ঢেলে সাজিয়ে ছিলেন।


জানা গেছে, ১৭শ শতাব্দির গোড়াপত্তনে এককালের লবণ ব্যবসায়ী সাহা পরিবার বিপুল অর্থসম্পত্তির মালিক হয়ে কয়েকটি জমিদারি পরগনা কিনে জমিদারি প্রথার গোড়াপত্তন শুরু করে।


১৮শ শতক থেকে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের আগে জমিদার পরিবারটি অনেক ধন-সম্পত্তির মালিক হন এবং ২২টি জমিদারি পরগনা ক্রয় করে বিশাল জমিদার হিসেবে ভারতবর্ষে খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান হিন্দুস্তান হওয়ার পর ১৯৪৭ থেকে ১৯৬২ সালে জমিদারি প্রথা থাকার আগ পর্যন্ত জমিদাররা কলকাতা বসে জমিদারি দেখাশোনা করত। জমিদারি প্রথা বাতিল হওয়ার পর জমিদার সুকুমার রায় বাহাদুর ছাড়া সবাই কলকাতা চলে যায়। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীনের পর সুকুমার বাবু আত্মহত্যা করেন। এরপর বাড়িটির আর কোন অভিভাবক না থাকায় পরিত্যক্ত বাড়ি হিসেবে গণ্য হয়ে যায়। মূল বাড়িটি থাকলেও চারপাশের অনেক জমি ভূমিদস্যুরা দখল করে নিয়েছে।


বর্তমানে ৫টি শান বাঁধানো পুকুর, বিশাল বাগানবাড়ি ও ছোট বড় চৌদ্দটি কারুকার্য খচিত দালান-কোঠা জমিদারদের কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিনিয়ত চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান দরজা-জানালা, লোহার কারুকার্য খচিত প্রতœতত্ত্ব। রাতের বেলা এ বাড়িটি হয় চোর ডাকাতের অভয়ারণ্য।


স্থানীয়দের দাবি, সরকারের তত্ত্বাবধানে নিয়ে এ বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করে একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হলে এলাকার পরিচিতি আরো বেড়ে যাবে। শুধু পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তহীনতার অভাবে আজ হারিয়ে যাচ্ছে বাইশরশি জমিদার বাড়ির ইতিহাস ঐতিহ্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু নজর দিলেই এই বাড়িতে হতে পারে দেশের একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।

No comments:

Post Top Ad

Responsive Ads Here